<Transparent Logo
Scroll down

head_chutir_banshi

ছুটির বাঁশি বাজল যে ওই
৭ অগস্ট, ২০২০

বাইশে শ্রাবণ বাঙালির জীবনে এক স্মরণীয় দিন। দীর্ঘ আশি বছর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে অমূল্য রত্নভাণ্ডারে সজ্জিত করে ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের এই দিনটিতে জীবনমরণের সীমানা ছাড়িয়ে অসীমের পথে যাত্রা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চলছিল রোগভোগ, কষ্ট। তাঁর মধ্যেও তিনি চলে গিয়েছিলেন কালিম্পং-এ, সেখান থেকে ফিরে এসেছিলেন কলকাতায়, আবার গেলেন শান্তিনিকেতনে। কবিজীবনের শেষ দিনগুলির কথা তুলে ধরা হল এই পুস্তিকায়। ...

কী আছে ভিতরে

রবীন্দ্রনাথের জীবন-ইতিহাসের পাতা ওলটাতে-ওলটাতে ময়মনসিংহের জমিদার বীরেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে ১৯৩৮ -এর ২ জুলাই লেখা তাঁর চিঠিতে চোখ আটকে গেল। কালিম্পং থেকে কবি লিখেছিলেন: “এখানে শরীর অনেকটা ভালো, মনও আছে আরামে তার প্রধান কারণ এখানকার নির্জনতা— তোমাদের বাড়িটিরও গুণ আছে। ... তোমার সাদর আমন্ত্রণ অনুসারে এইখানেই শরৎকাল যাপন করব— সকলেই বলচে সেই সময়টা মনোরম এবং স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ অনুকূল।"১ দেহ-মনের স্বাস্থ্যের কারণে স্থানবদল যতবারই হোক, তবু তাঁর স্থায়ী আসন শান্তিনিকেতনেই পাতা।
সুর আছে, গভীর চিন্তার প্রকাশ আছে, রং-তুলির রাজ্যপাট জাঁকিয়ে বসেছে মনের উপর, আশ্রমভাবনা, বিশ্বভারতী ও তার নানা সমস্যা, সে-ও ঘিরে ধরে অনবরত। শরীরও ভাঙছে, বার্ধক্যের ছায়াও ধীরে ধীরে ঘনাচ্ছে, স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে উঠছে দিনে দিনে।
১৯৪০-এর ১৯ সেপ্টেম্বর অমিয় চক্রবর্তীকে লিখলেন: “কিছুদিন থেকে আমার শরীর ক্রমশই ভেঙে পড়চে, দিনগুলো বহন করা যেন অসাধ্য বোধ হয়। তবু কাজ করতে হয়েছে তবু এত অরুচি বোধ সে বলতে পারি নে। ভারতবর্ষে এমন জায়গা নেই যেখানে পালিয়ে থাকা যায়। ভিতরের যন্ত্রগুলো কোথাও কোথাও বিকল হয়ে গেছে— বিধান রায় আশঙ্কা করেন হঠাৎ একটা অপঘাত ঘটতে পারে। সেই জন্যে কালিম্পঙে যেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু মন বিশ্রামের জন্যে এত ব্যাকুল হয়েছে যে তাঁর নিষেধ মানা সম্ভব হোলো না। চল্লুম আজ কালিম্পঙ।"
সুধাকান্ত রায়চৌধুরী ও বনমালীকে সঙ্গে নিয়ে পরদিন কালিম্পঙে পৌঁছলেন। তাঁর বউমা প্রতিমা দেবী আগেরবারের মতোই তখন সেখানে, ওই গৌরীপুর লজে। তিনি লিখেছেন: “উৎসুক হয়ে দাঁড়িয়ে আছি, এমন সময় শুনি হর্ন বাজাতে বাজাতে প্রকাণ্ড মোটরটা পাহাড়ের সরু রাস্তা বেয়ে নেমে আসছে। গাড়ি এসে দরজায় দাঁড়াল; আমরা এগিয়ে গেলুম, সুধাকান্ত দেখলুম আগেই নেমে পড়েছে, তার পর বাবামশায়কে হাত ধরে নামিয়ে নিলে। এবার তাঁকে খুব অসুস্থ দেখাচ্ছিল। তাঁকে ঘরে নিয়ে আসা হল, চৌকিতে বসলেন, আমরা সকলেই খানিকক্ষণ চুপ করে রইলুম। বাবামশায় নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করে বললেন, ‘বউমা মৈত্রেয়ী লিখেছিল ওর ওখানে যেতে কিন্তু সেখানে যেতে সাহস হল না, আমি এখানেই এলুম। ডাক্তাররা বলছেন আমার কখন‍্ কী হয়, তাই তোমাদের কাছাকাছি থাকাই ভালো। আমাকে এবার বড়ো ক্লান্ত করেছে, ভিতরে-ভিতরে দুর্বল বোধ করছি, মনে হচ্ছে যেন সামনে একটা বিপদ অপেক্ষা করে আছে’।"

ডাউনলোড করুন

প্রকাশকাল: ৭ অগস্ট, ২০২০ (২২ শ্রাবণ ১৪২৭)
তথ্যসংশ্লেষ ও লিখন: অভীককুমার দে
প্রচ্ছদ ও শিল্প-নির্দেশনা: সোমনাথ ঘোষ

সম্পাদক: সৈকত মুখার্জি

গ্রাহক হোন
হরপ্পার গ্রাহক হতে গেলে বছরে তিনটি সংখ্যার জন্য মোট পাঁচশো টাকা দিতে হয়। (ডাকমাশুল আলাদা)
যোগাযোগ করুন ই-মেলে অথবা ফোনে কথা বলুন।

সরাসরি প্রাপ্তিস্থান
• হরপ্পার পরিবেশক পশ্চিমবঙ্গে অক্ষর প্রকাশনী, ১৮এ টেমার লেন, কলকাতা-৯ ও বাংলাদেশে বাতিঘর।
• কলেজস্ট্রিটে পাতিরাম, ধ্যানবিন্দু, দেজ, দে বুকস্টোর, উল্টোডাঙায় সুনীলদার দোকান, রাসবিহারী মোড়ে কল্যাণদার দোকান, রিড বেঙ্গলি বুক স্টোর, শান্তিনিকেতনে রামকৃষ্ণর দোকানের মতো বহু স্টলে হরপ্পা নিয়মিত পাওয়া যায়। এছাড়া অনলাইনে হরপ্পা বিক্রি হয়।
• পত্রিকা পেতে আপনি দপ্তরেও মেল করতে পারেন।

মুদ্রিত সংখ্যা
হরপ্পার যাত্রা শুরু ২০১৭-র অক্টোবর মাসে চতুর্মাসিক পত্রিকা হরপ্পা লিখন চিত্রণ-এর প্রকাশলগ্নে। মূলত সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে হরপ্পা আত্মপ্রকাশ করে বাংলার শিল্পসংস্কৃতি আচার অনুষ্ঠান রীতিনীতি পালাপার্বণ প্রভৃতি নানা বিষয়কে দু-মলাটের ভিতর নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরার লক্ষ্যে। দেখবেন চলুন...