<Transparent Logo
Scroll down

photography

ফোটোগ্রাফি
প্রথম় বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা

ফোটোগ্রাফি বর্তমানে এক জনপ্রিয় মাধ্যম। নেশাদার থেকে পেশাদার সবাই ছবি তুলে চলেছেন, অন্যের ও নিজের, মোবাইলে-ক্যামেরায়, দরকারে-অদরকারে। ডিজিটাল ক্যামেরা ও মুঠোফান আসার আগেও ফোটোগ্রাফির চিত্রটা এরকম ছিল না, তা আবদ্ধ ছিল সীমিত সংখ্যক মানুষের আয়ত্তের মধ্যে। ফোটোগ্রাফির শুরুর দিন থেকে আজ পর্যন্ত পেশাদার আলোকচিত্রীদের খুঁটিনাটি ধরা পড়ল মুখোমুখি, এই সংখ্যায়। ...

কী আছে ভিতরে

আলো ক্রমে আসিতেছে৷’
সূচিছিদ্র ক্যামেরায় আলো ণোকার পর যে আবছা অবয়ব তৈরি হত তা দেখে চমকে গিয়েছিল মানুষ৷ কারণ এর আগে তার মনের ভিতর বাস-করা নার্সিসাস তৃপ্তি পেত জলের উপর নিজের ছায়া অথবা আরশিতে প্রতিবিম্ব দেখে কিংবা ট্যাঁকের জোর থাকলে শিল্পীকে দিয়ে আঁকানো নিজের ছবি বা ভাস্করের তৈরি তার মূর্তির দিকে তাকিয়ে৷ তবে জলে বা আয়নায় ছায়া ক্ষণস্থায়ী, শিল্পীর সৃষ্টিতে মিশে থাকে স্রষ্টার মনের মাধুরী—তাই সূচিছিদ্র ক্যামেরা বা ‘ক্যামেরা লুসিডা’ বিবর্তিত হয়ে যখন দাগেরোটাইপ ক্যামেরার রূপ পেল তখন তার জনপ্রিয়তা অর্জনে সময় লাগেনি৷ এমনকি সাহেবদের হাত-ধরে যখন তা এই বঙ্গদেশে ঢুকল তখন দেশি-বিদেশি সবাই মেনে নিয়েছিল তাকে৷ শুরুর দিকে বাঙালির সরাসরি অংশগ্রহণ ছিল সীমিত৷ ছবি-তোলার ইচ্ছা থাকলেও সবাই ছবি তুলতে পারত না—কারণ সাধ হলেই তো আর সাধ্য থাকে না৷ তার ওপরও একটা অজানা ভৌতিক ভয়ও কাজ করত৷ কিন্তু বিলিতিবাবুদের অনুকরণ-মোহে মেতে-থাকা বাঙালিকে বেশি দিন ‘চেহারা ওঠানো’-র শখ থেকে সরিয়ে রাখা যায়নি৷ যাঁদের সাধ ও সাধ্যের ফারাক কম ছিল তারা ন-মাসে-ছ-মাসে ছবি তোলাতেন৷
বাঙালি শখে ছবি তোলালেও স্টুডিয়ো খুলে বসে যাঁরা সে-ছবি তুলতেন তাঁরা কিন্তু ছিলেন দস্তুরমতো পেশাদার৷ খবরের কাগজে রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে তাঁরা খদ্দের ডাকতেন, শুধু স্টুডিয়োতেই নয়, প্রয়োজনে বাড়ি গিয়েও ছবি তুলতেন৷: তবে দাগেরোটাইপ ক্যামেরায় ছবি তোলা কি যে-সে ব্যাপার! পালিশ-করা তামার পাতে রূপোর গিল্টি করা থাকত, তাকে আয়োডিন ও ব্রোমিন বাস্পের ওপর রেখে ণোকাতে হত ক্যামেরাতে৷ ছবি-তোলা হয়ে গেলে ওই প্লেটটাকেই আবার উষ্ণ পারদ বাস্পের ওপর রাখলে আলো-পড়া অংশগুলো রুপো আর পারদের বিক্রিয়ায় ফুটে উঠত আর অন্ধকার যে-অংশগুলো পড়ে থাকত, তা আসলে বিক্রিয়া না-হওয়া ওই রুপোর পাত৷ ধাতুর পাতের ওপর ছবি তোলা হত বলে এর কোনো নকল বা কপি করা যেত না৷ এত হাঙ্গামা ছিল বলে ফক্স ট্যালবট ‘ক্যালোটাইপ’ পদ্ধতি আবিষ্কার করলে মোম-ঘষা নেগেটিভের ওপর ছবি তুলে নোনা-কাগজে ছবির ছাপ নিতে উৎসাহী হন অনেকেই৷ এই সল্ট-প্রিন্ট পদ্ধতিতে কপি করা গেলেও সময় লাগত ঢের বেশি৷ তাই ১৮৫১-তে ‘কলোডিয়ান’ পদ্ধতি চালু হলে কাচের নেগেটিভকে সিলভার নাইট্রেটে ডুবিয়ে ক্যামেরায় ঢুকিয়ে ‘ওয়েট প্লেট’-এ ছবি-তোলা শুরু হয়৷ পরে এই কলোডিয়ান পদ্ধতিও বন্ধ হয়েছে ব্যবহার-করা কেমিকালটি থেকে বিস্ফোরণ ঘটার ভয়ে৷ এরপর এসেছে আরও অনেক পদ্ধতি৷ আর বিদেশের মতো কলকাতাও প্রযুক্তির তালে তাল দিয়ে গ্রহণ করেছে নতুনতর ছবি-তোলার ধরনকে, যদিও বহু ফোটোগ্রাফার চালিয়ে গেছেন একই সঙ্গে একাধিক পদ্ধতি৷
এর থেকে বোঝা যায়, উনিশ শতকের মাঝামাঝি বঙ্গদেশে জন্ম হয় এক নতুন পেশার৷ বিজ্ঞাপনে দেখা যায়, ৬ নং লাউডন স্ট্রিটের ‘দাগেরিয়ান গ্যালারি’, ৪নং লাউডন বিল্ডিংস-এর ‘এস বি সলমনস, ১৪ নং এসপ্লানেড রো-র ‘মেসার্স ডাবলিউ বেল অ্যান্ড কো’স’ প্রভৃতি হরেক সংস্থার হদিশ৷ সাহেবদের সঙ্গে থেকে বা নিজের আগ্রহে এ বিদ্যা আয়ত্ত করে ফেলেন বেশ কিছু উৎসাহী দেশি মানুষ৷ ছবি তোলা থেকে ক্যামেরা বানানো পর্যন্ত বহু কিছুই করেছেন তাঁরা৷ পেশাদার হিসেবে তাঁদের অনেকেই খুলে ফেলেন স্টুডিয়ো৷ ১০৭ রাধাবাজার-এর নীলমাধব দে-র ‘বেঙ্গল ফোটোগ্রাফারস’ (স্থাপিত ১৮৬২) তার অন্যতম৷ স্টুডিয়োই নয়, পাশাপাশি কাগজ-কেমিকাল-ক্যামেরার দোকান গজিয়ে ওঠে শহরে, অনুসারী ব্যবসা হিসেবে৷
আবার পর্দানশিন মহিলাদের ছবি-তোলার সুযোগ করে দিতে উনিশ শতকের ওই ষাটের দশকেই কলকাতায় মিসেস মায়ার চালু করেন জেনানা স্টুডিয়ো৷ সেখানে ফোটোগ্রাফার তো মহিলা হতেনই সঙ্গে থাকত পর্দা-ঢেকে পালকি করে স্টুডিয়োর ভিতর নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা৷ তবে বাঙালি মেয়েরাও পিছিয়ে থাকেননি, তাঁরাও এগিয়ে এসেছেন ছবি-তোলা শিখতে, খুলেছেন স্টুডিয়ো৷ এঁদের মধ্যে ৩২ কর্নওয়ালিশ স্ট্রিটের সরোজিনী ঘোষ, অন্নপুর্ণা দত্ত, ৫নং বিবি রোজি লেনের চঞ্চলাবালা দাসী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য৷ পেশাদারি কাজে এঁরা পুরুষদের থেকে কোনো অংশে কম ছিলেন না, নিজেরাই ছবি তুলতেন আবার তা ডিভেলপ-এনলার্জও করতেন৷ সেকালে মেয়েদের এই পেশায় সক্রিয়তা থেকে বেশ বোঝা যায় পেশা হিসেবে ছবি-তোলার মূল কতটা মজবুত ছিল, পাশাপাশি কেমনই-বা ছিল সমাজে তার জনপ্রিয়তা৷
কম খরচে ফোটোগ্রাফকে হাতের নাগালে পাওয়ার কারণে ছবি-আঁকিয়েদের বাজারে যে মন্দা আসে, তা না-বললেও বোঝা যায়৷ সে-কারণে আর্ট কলেজগুলিতেও ছবি-আঁকার পাশাপাশি ছবি-তোলা শেখানোরও শুরু৷ ‘আর্ট কলেজ’-এ শেখানো আরম্ভ হওয়ার পর ফোটোগ্রাফি পুরোদস্তুর শিল্পের মর্যাদা পেয়েছিল ভাবলে অবশ্য ভুল হবে৷ বরং ছবি-তোলার বাড়তে-থাকা জনপ্রিয়তার জন্য চিত্রকরদের কাজ কমে যাচ্ছিল, তাই শিক্ষানবিশ চিত্রশিল্পীদের ‘চেহারা ওঠানো’-র শিক্ষা দিয়ে ভবিষ্যতে স্বাবলম্বনের রাস্তা সুগম করাই ছিল এর লক্ষ্য৷ তাঁরা অবশ্য পেশাদার হিসেবে কাজ শুরু করলে নিজেদের পরিচয়ে লিখতেন, ‘আর্টিস্ট অ্যান্ড ফোটোগ্রাফার’৷ এর আগে ‘দাগেরিয়ান’-রাও নামের সঙ্গে ফোটোগ্রাফার নয় লিখতেন ‘দাগেরিয়ান আর্টিস্ট’, পরে ‘কলোডিয়ান’-রা সম্ভবত ‘ফোটোগ্রাফার’ শব্দটি লেখা শুরু করেন৷ ফোটোগ্রাফি নিয়ে মূল আপত্তিটা অবশ্য ছিল আলোকচিত্রের যন্ত্রনির্ভরতাকে কেন্দ্র করে৷ সেক্ষেত্রে, একথা ভুলে গেলে চলবে না অন্যান্য শিল্পমাধ্যমগুলিও কিন্তু কম-বেশি যন্ত্রনির্ভর৷ পাশাপাশি, অন্য শিল্পের থেকে ছবি-তোলার ক্ষেত্রে প্রাপ্ত সময় ও অবাঞ্ছিত জিনিসকে বাদ দেওয়ার সুযোগ-স্বাধীনতাও অনেক কম৷
এ দ্বন্দ্ব বা সমালোচনা শুধুমাত্র অন্য শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকেদেরই মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না৷ সমকালীন ফোটোগ্রাফারাও এ ব্যাপারে সরব ছিলেন৷ কারণ একটু সাবালক হলেই ফোটোগ্রাফিতে সৌন্দর্যের খোঁজখবর করতে তাঁরা শুরু করেছিলেন৷ আদীশ্বর ঘটক যেমন তাঁর ‘ফটোগ্রাফী শিক্ষা’ (১৩০১)-য় ছবি-আঁকার থেকে ছবি-তোলার শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে জোর দিয়েছিলেন, ‘চিত্রকর সম্প্রদায় এই শিল্পটিকে আন্তরিক ঘৃণা করেন৷ তাহার মূল কারণ ফটোগ্রাফী ক্রমে ক্রমে তাঁহাদের গৌরব ফাঁক করে দিতেছে৷ মনুষ্যশিল্প যখন বিশ্বনিয়ন্তার সৃষ্ট কোন পদার্থের চিত্র নির্ভুল রূপে করিতে পারে নাই, ফটোগ্রাফী তাহা ধরাইয়া দিয়াছে৷’ উপেন্দ্রকিশোর কিন্তু আলোকচিত্রে সৌন্দর্যচর্চার সুযোগের কথা ‘ফটোগ্রাফী চর্চা’ (‘প্রবাসী’, ভাদ্র ১৩১২) প্রবন্ধে বলেছেন:৷ তবে তিনি জানতেন, ‘... এ বিষয়টি অতিশয় কঠিন, অনেক যত্ন আর পরিশ্রমে ইহার কিঞ্চিত ফললাভ হইতে পারে৷’ এর কারণ ব্যাখ্যা করেছেন সুকুমার রায় ‘ফটোগ্রাফী’ (‘প্রবাসী’, জ্যৈষ্ঠ ১৩১৮) প্রবন্ধে, ‘... ফটোগ্রাফীর নির্বিচার দৃষ্টিতে সুন্দরও নাই, অসুন্দরও নাই, আমার মন কতটুকু চায় বা না চায় তাহার সহিত কোনো সম্পর্কই রাখে না সুতরাং তাহার পক্ষে নীর ত্যাগ করে ক্ষীর গ্রহণ একেবারেই অসম্ভব৷’
দ্বন্দ্ব থাকলেও ছবি-তোলা থেমে থাকেনি, নিজস্ব গতিতেই চলেছে৷ বিদেশি ফোটোগ্রাফার ও স্টুডিয়োগুলো ব্যবসায়িক নানা ছবি-তোলার পাশে এদেশে ব্রিটিশ-মাহাত্ম্যের প্রচারের জন্য বহু ছবি তুলেছেন৷ ভারতবর্ষের মানুষজন ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যকে ক্যামেরাবন্দি করে আকর্ষণ করেছেন ইংরেজ যুবকদের ভারতে চাকরি করতে আসার জন্য৷ সামরিক নানা ছবিও তোলা শুরু করেছিলেন পেশাদাররা৷ ‘সার্ভে অভ্ ইন্ডিয়া’-র মতো সংস্থার জন্ম হয়েছিল মানচিত্র তৈরির প্রয়োজনে৷ কারণ ফোটোগ্রাফির মতো নিরপেক্ষ নকল করা বা প্রমাণ রাখা কিন্তু অন্য কোনোভাবে সম্ভব ছিল না৷ ফোটোগ্রাফির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে এতটা জোর দেওয়া হলেও আমরা দেখেছি, স্টুডিয়ো-ফোটোগ্রাফির স্বর্ণযুগে ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করে এক অতিবাস্তব পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা, কিংবা হাল আমলে ফোটোশপের হরেক ভেলকি৷ এছাড়া পেনসিল-তুলি ব্যবহার করে খরিদ্দারকে সুন্দর করে তোলার বিষয়ও ছিল৷ তা-ও ফোটোগ্রাফির অলীক ক্ষমতার কাছে নতি স্বীকার করে মৃত্যুর বহু পরেও জ্যান্ত হয়ে থাকেন ফ্রেমে-বাঁধা পূর্বপুরুষেরা গৃহস্থের ঘরের দেওয়ালে-দেওয়ালে৷
দেশ স্বাধীন হয়েছে৷ পালটেছে সমাজ-অর্থনীতি-প্রযুক্তি৷ তাল মিলিয়ে বদলেছে ফোটোগ্রাফির ধারা৷ দাগেরোটাইপ, কলোটাইপ, ট্যালবটাইপ, স্টিরিয়োস্কোপ, ফিল্ম-এর পর এসেছে ডিজিটাল পদ্ধতি৷ পরিবর্তন হয়েছে আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রেরও৷ এত বদল সত্ত্বেও পেশা হিসেবে ফোটোগ্রাফির গুরুত্ব কমেনি৷ প্রথম যুগে খবরের কাগজের নিজস্ব সংবাদচিত্রী না-থাকলেও পরে নিযুক্ত হয়েছেন আংশিক বা পূর্ণ সময়ের আলোকচিত্রী৷ সরকারি সব দপ্তরের ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজনে চিত্রগ্রাহক নিয়োগ হয়েছে ধীরে৷ বিজ্ঞাপনের জয়ঢাক বাজানোর জন্যেও এগিয়ে এসেছেন পেশাদাররা৷ সিনেমার প্রচারের কাজেও ব্যবহার হয় স্থির ছবি, সেখানেও ভিড় তাঁদের৷ এছাড়া বাঙালির উৎসব-পার্বনেও হাজির প্রফেশনাল ফোটোগ্রাফার৷
তাই আন্তর্জাতিক ফোটোগ্রাফি দিবসের (১৯ অগস্ট) আগে আমাদের পত্রিকার বিষয় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ‘পেশাদার ফোটোগ্রাফি’-কেই৷ অবশ্যই আমাদের আলোচনার কেন্দ্রে বাঙালি পেশাদাররা (একমাত্র ব্যতিক্রম প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় আলোকচিত্রী রঘু রাই)৷ যেহেতু এ সংখ্যায় আমাদের লক্ষ্য শুধু পেশাদারদের তুলে ধরা তাই তাঁদের ‘মুখোমুখি’ বসে, ‘সরাসরি’ তাঁদের মনের কথা তুলে ধরে কিংবা স্মৃতি রোমন্থন করে সোনালি অতীতকে ‘ফিরে দেখা’-র মধ্যে দিয়ে বলা হয়েছে, কালের যাত্রাপথে পেশা হিসেবে ফোটোগ্রাফি কতটা কঠিন ও জটিল ছিল, এবং তার মধ্যেও কী নিপুণভাবে তাঁরা এই পেশাটিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন৷ পাশাপাশি এটাও দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে, বিবর্তনের নিয়ম মেনে কীভাবে প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে-সঙ্গে তাঁরা মানিয়ে নিয়েছেন নিজেদের৷ শুধু তাই নয়, পেশাদার ও নেশাদারদের দ্বন্দ্ব অথবা বাংলা সাহিত্যে এই পেশাদার আলোকচিত্রীরা কতটা গুরুত্ব পেয়েছেন, ‘ফোকাস’ করা হয়েছে সেদিকেও৷
বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়ায় মোবাইলের দৌলতে আমআদমির সংখ্যা বোধহয় ফোটোগ্রাফারের তুলনায় কম৷ পেশাদার নাহলেও তাঁদের দৌরাত্ম্যে ঘটে-চলা সব কিছুই ফ্রেম-বন্দি হচ্ছে, প্রকাশিত হচ্ছে ‘স্যোশাল মিডিয়া’-র টাইমলাইনে৷ ‘লাইক-কমেন্ট’-এর বন্যায় ভেসে যাওয়া ফোনচিত্রীরা কতটা সেই মুহূর্তগুলিকে সংরক্ষণ করছেন, তা নিয়ে কিন্তু বিস্তর সন্দেহ আছে৷ তাঁদের সংখ্যাধিক্যে পেশাদাররা সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছেন ধীরে-ধীরে৷ চলমান আলোকচিত্রীরা এখন কালেভদ্রে স্টুডিয়োমুখো হন৷ মোবাইল-পর্দা বা ল্যাপটপ-কম্পিউটারের স্ক্রিনে ছবি দেখেই সবাই বেদম খুশি৷ ছবি প্রিন্ট-করা প্রায় উঠে যেতে বসেছে৷ এমনকি প্রয়োজনে কাজ-চালানোর মতো প্রিন্টার এখন অনেকের ঘরেই আছে৷ এ অবস্থায় ম্রিয়মান পেশাদাররা তবুও আছেন, থাকবেনও৷ প্রয়োজনীয় অনেক ক্ষেত্রেই তাঁদের বিকল্প এখনও আসেনি৷ সাধের সাধনায় প্রতি মুহূর্তে প্রায় লাখ-লাখ ছবি তোলা হলেও সেখানে থাকে না সংবাদচিত্রীর সাহস ও অনুমান দক্ষতা, বিজ্ঞাপনের আলোকচিত্রীর নিখঁুত পরিমিতিবোধ, আর্কিয়োলজিকাল ও জুলজিকাল ফোটোগ্রাফারের ক্যামেরারর ওপর নিয়ন্ত্রণ এবং এরকম আরও অনেক কিছুই৷ সংখ্যার থেকেও গুণমানের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি—নচেৎ প্রযুক্তির আলোতে বাস করেও বলতে হবে, ‘আলো কমে আসিতেছে৷’

প্রকাশকাল: জুন ২০১৮
প্রচ্ছদ ও শিল্প-নির্দেশনা: সোমনাথ ঘোষ

সম্পাদক: সৈকত মুখার্জি

বিষয়সূচি

মুখোমুখি
রঘু রাই
সাক্ষাৎকার
নিমাই ঘোষ
সাক্ষাৎকার
অরুণ গাঙ্গুলি
সাক্ষাৎকার
তপন দাস
সাক্ষাৎকার
সনৎ ঘোষ
সাক্ষাৎকার
রনি সেন
সাক্ষাৎকার...সরাসরি
মানববিজ্ঞান বিভাগের ফোটো-ইউনিট: শূন্য থেকে শুরু
অভীককুমার দে
প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের ফোটো-ইউনিট: ১৯৮৭-২০০৭
সত্যশ্রী উকিল
সুকুমার রায়: ছায়াজগতের স্থিরচিত্রের চিত্রগ্রাহক
সঞ্জিৎ চৌধুরী
বিবেক দাস: নিখুঁত বাণিজ্যিক ছবির খোঁজে
একটি প্রতিবেদন
শহীদুল আলম:ছবির ‘পাঠশালা’র গুরুমশাই
একটি প্রতিবেদন
অশোক মজুমদার: সংবাদচিত্রীর না-বলা জীবনকথা
একটি প্রতিবেদন
অভিষেক স্কারিয়া:বিবাহবাসরের নতুন ধারার আলোকচিত্রী
একটি প্রতিবেদন
সৌম্যশংকর বসু: সময়ের ছবির গল্পকথক
একটি প্রতিবেদন
বিকাশ বোস: নি-নাইয়ার শতেক নাও
একটি প্রতিবেদন
ফিরে দেখা
ফোটোগ্রাফার পূর্বপুরুষদের গল্প
মলয় রায়চৌধুরী
টুকরো চিন্তা
অরুণ নাগ
স্মৃতির দেওয়ালে ছবির সারি: পেশা বনাম নেশা
দেবাশিস বসু
সত্যেন মণ্ডল: আলেখ্য-দর্শন
সুধীর চক্রবর্তী
জ্যোতিষ চক্রবর্তী: ডার্করুমের জাদুকর
শুভেন্দু চ্যাটার্জি
বাংলা সাহিত্যে ছবি-তোলার অল্পগল্প:ষেকালে-একালে
সুমন ভট্টাচার্য
ঐতিহ্য ও পরম্পরার ধারক:দাস স্টুডিয়ো
একটি প্রতিবেদন
কলকাতার স্টুডিয়ো-কথা
একটি প্রতিবেদন
তিনপুরুষের স্টুডিয়ো-কথা: ডি এন মিত্র, রানাঘাট
সৈকত মুখোপাধ্যায়


 

গ্রাহক হোন
হরপ্পার গ্রাহক হতে গেলে বছরে তিনটি সংখ্যার জন্য মোট পাঁচশো টাকা দিতে হয়। (ডাকমাশুল আলাদা)
যোগাযোগ করুন ই-মেলে অথবা ফোনে কথা বলুন।

সরাসরি প্রাপ্তিস্থান
• হরপ্পার পরিবেশক পশ্চিমবঙ্গে অক্ষর প্রকাশনী, ১৮এ টেমার লেন, কলকাতা-৯ ও বাংলাদেশে বাতিঘর।
• কলেজস্ট্রিটে পাতিরাম, ধ্যানবিন্দু, দেজ, দে বুকস্টোর, উল্টোডাঙায় সুনীলদার দোকান, রাসবিহারী মোড়ে কল্যাণদার দোকান, রিড বেঙ্গলি বুক স্টোর, শান্তিনিকেতনে রামকৃষ্ণর দোকানের মতো বহু স্টলে হরপ্পা নিয়মিত পাওয়া যায়। এছাড়া অনলাইনে হরপ্পা বিক্রি হয়।
• পত্রিকা পেতে আপনি দপ্তরেও মেল করতে পারেন।

বৈদ্যুতিন পুস্তিকা
করোনার আক্রমণে অন্তরীণ অবস্থায় ১ বৈশাখ ১৪২৭ থেকে ‘হরপ্পা’-র বৈদ্যুতিন পুস্তিকা প্রকাশের সূচনা। এই পুস্তিকা নিজেদের ওয়েবসাইট, সামাজিক মাধ্যম, যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। দেখবেন চলুন...