<Transparent Logo
Scroll down

আমাদের
খনন চলছে

খনন চলছে৷ প্রতিনিয়ত৷ ঘরেবাইরে, অন্দরেকন্দরে, সামনেপিছনে, সমাজেসংসারে—সদাসর্বদা৷ খোঁজ জারি রয়েছে কোনো প্রাচীন সভ্যতার উৎস সন্ধানের৷ মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, হাজার-হাজার বছর আগে টিকে থাকা, বর্তমানে নামমাত্র চিহ্ন না-থাকা সভ্যতার খোঁজের কী দরকার৷ কী দরকার তার জীবনযাত্রা, আচারব্যবহার, ভাষা-লিপি সম্পর্কে জেনে৷ বরং অতীতের খোঁজ না-করে বর্তমানে যা আছে তার ওপর ভিত্তি করেই চেষ্টা করা যায় না নতুন কোনো সভ্যতা গড়ে তোলার৷ তৈরি করা যায় না নতুন কোনো সমাজসংস্কৃতি৷ বানানো যায় না নতুন কোনো লিপি৷ অলীক স্বপ্নের পেছনে দৌড়ে লাভ কী! লাভ কী জানতে চেয়ে পেছনে-ফেলা জীবনের দিনচিত্র৷ আসলে অতীতকে অস্বীকার করে বর্তমান বা ভবিষ্যতের কোনো অস্তিত্বই নেই৷ তাদের তিনজনের যৌথ সংসারে প্রত্যেকেই তারা পরের তরে—যে-কোনো একজনকে বাদ দিলেই বাকিরা তো ভারসাম্যহীন, দুর্বল, নড়বড়ে৷ কারণ আজকে যা বর্তমান কালকে তা অতীত হবে, আজকের ভবিষ্যৎ কালকের বর্তমান হবে৷ এবং কালক্রমে অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের স্থানবদল ঘটে চলবে যতদিন এ পৃথিবীতে সময়ের চাকা ঘুরবে৷ চরকায় তকলি কাটতে-কাটতে বুড়ি যেদিন থামিয়ে দেবে হাত ঘোরানো সেদিন চিরতরে থেমে যাবে সময়ের ছটফটানি অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের স্থানবদল৷ তখন সবই অতীত৷ আর তাই বহতা সময়ে যে-জিনিসগুলি আমরা দেখতে পাচ্ছি বা যা আমাদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে তা আমরা ধরে রাখতে চাই ভবিষ্যতের জন্য—ছাপা অক্ষরে বইয়ের পাতায়৷ ‘হরপ্পা’ নামটি প্রতীক মাত্র৷


হরপ্পার লক্ষ্য

  • বাংলা ও বাঙালির সনাতন ঐতিহ্যকে তুলে ধরা। নতুন ও পুরোনো সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটানো।
  • নানা নিবন্ধ-প্রবন্ধের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ছবিকেও উদ্ধার করে লেখার সঙ্গে বিশেষ সমতা রেখে ছাপা।
  • সুচারু বিন্যাস ও মুদ্রণের মাধ্যমে পাঠকের কাছে আকর্ষণীয়ভাবে মূল বিষয়কে তুলে ধরা।
  • করোনা আক্রান্ত পরিস্থিতিতে ১৪২৭ বঙ্গাব্দের সূচনায় হরপ্পা বৈদ্যুতিন পুস্তিকার সূচনা।
  • ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ হরপ্পার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে পুস্তিকা পৌঁছে যাচ্ছে পাঠকের কাছে।
  • মুদ্রিত সংখ্যার পাশাপাশি বৈদ্যুতিন সংখ্যা প্রকাশের প্রয়াস চালানো।

Galpogachha

গল্পগাছা

আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতার কড়চা,
২৩ মার্চ,২০২০

গল্প যত বার বলা হয়, একটু-একটু করে বদলে যায়, যে হেতু মুখের ভাষার কোনও বাঁধাবাঁধি নেই, যখন যিনি বলেন তাঁর মনোভঙ্গি-ই কথিত গল্পটিকে একটা আকার দেয়। "প্রতিদিনের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ...গল্প বলা বা শোনার সময়টাও...এইটুকু বলা যেতে পারে সভ্যতার ইতিহাসে একটা ঐতিহ্য কখনো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায় না।’’ লিখেছেন সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘হরপ্পা/ লিখন চিত্রণ’-এর (সম্পা: সৈকত মুখোপাধ্যায়) সাম্প্রতিক ‘গল্পগাছা’ সংখ্যাটির শুরুতেই। সম্পাদকের মতে, ‘‘মুখে-বলা এই গল্প আমাদের বিবর্তনের সাক্ষী, প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রামের আলেখ্য... ’’। শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনবদ্য কলমে মহাভারত-এর গল্পগাথা নিয়ে: ‘ধর্ম আছ তুমি কোথায়’, অবতল জীবনের সন্ধানী সুধীর চক্রবর্তীর গভীর নির্জন পথের অভিজ্ঞতা, দেবাশিস বসুর ‘মনে-থাকা গল্পকথা’য় প্রাচীন বাঙালি পরিবারের ইতিহাস, সুনন্দা সিকদারের ময়মনসিংহের গল্প-বলার স্টাইল ও বিবর্তন, শ্যামলী দাসের কাঁথা-র কথা, ভবেশ দাসের বেতারে গল্পের দাদা-দিদি-দাদুরা... এমনই আরও মনকাড়া রচনা মিহির সেনগুপ্ত অশোককুমার কুণ্ডু দীপঙ্কর ঘোষ সত্যশ্রী উকিল কিশোর দাস দেবাশিস গুহনিয়োগী অমিতাভ সেনগুপ্ত ভাস্কর দাস সৌম্যদীপ ও স্বয়ং সম্পাদকের। দৃষ্টিনন্দন শিল্প-অলঙ্করণ ও সোমনাথ ঘোষের প্রচ্ছদে শোভিত গোটা সংখ্যাটি। স্বতন্ত্র ক্রোড়পত্রে: বাংলাদেশের লোককথায় ‘বোকা জামাই’। সঙ্গে পত্রিকার প্রচ্ছদ।

marirupena

মাতৃরূপেণ

আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতার কড়চা,
৩০ সেপ্টেম্বর,২০১৯

শারদীয় পত্রিকার বড্ড ভিড় এখন। গল্প কবিতা উপন্যাস ইত্যাদির সঙ্গে প্রবন্ধ শীর্ষক দু’একটি রম্যরচনা, ব্যস। লিটল ম্যাগাজিন আবার কোনও কোনওটি ভীষণ রাশভারী, পাতার পর পাতা গুরুগম্ভীর লেখায় ঠাসা।... পড়তে পড়তে হাঁপ ধরে যায়, চোখ একটুও বিশ্রাম পায় না। ‘হরপ্পা লিখন চিত্রণ’ (সম্পা: সৈকত মুখার্জি, পরি: অক্ষর প্রকাশনী) নেহাতই ব্যতিক্রম। ম্যাট আর্ট পেপারে ছাপা, প্রায় প্রত্যেক পাতায় সুমুদ্রিত সাদাকালো ছবি— প্রায় ২৫০ পাতার পত্রিকা দুর্গাকে কেন্দ্রে রেখে বহু বিচিত্র লেখায় সমৃদ্ধ। রবীন্দ্রনাথের লেখনীতে শরৎ ঋতুর পাশাপাশি কলকাতার ক’টি অবলুপ্ত ঠাকুরদালানের ইতিবৃত্তান্ত, জয়পুর সংগ্রহের ‘দুর্গাপাঠ’ পুঁথির চিত্রকথা, পটের দুর্গা, পুজোর সুভেনির, কলের গানে আগমনি, শোলাশিল্প, হিন্দুতীর্থ ও বাঙালিনি থেকে মহিষাসুরের কথা— এমনই বিপুল সম্ভার। এত শিল্পিত পত্রিকা বাংলাবাজারে দুর্লভ।

sangbadpatra

সংবাদপত্র

আনন্দবাজার পত্রিকা, কলকাতার কড়চা,
২ সেপ্টেম্বর,২০১৯

বাংলা সংবাদপত্রের প্রকাশনা দু’শো বছর পেরিয়েছে। কিন্তু উনিশ শতকের পত্রপত্রিকা নিয়ে ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে স্বপন বসু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করলেও বিশ শতক এখনও অবহেলিত। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে গিয়েছে স্বাধীনতা-পূর্ব ...অধিকাংশ বাংলা সংবাদপত্রের (বিশেষত দৈনিক) ফাইল। সিকি শতক আগে ক্যালকাটা জার্নালিস্টস ক্লাব ‘কলকাতার বিলুপ্ত দৈনিক’ শিরোনামে কিছু সংবাদপত্রের তথ্য সঙ্কলন করেছিল। এ বার ‘হরপ্পা/লিখন চিত্রণ’ (সম্পা: সৈকত মুখোপাধ্যায়) তাদের ‘সংবাদপত্র’ সংখ্যায় এই ইতিহাসের অনেক আলগা সূত্রে গ্রন্থি বাঁধতে পেরেছে। যে তথ্য এখানে সঙ্কলিত রইল, তা ভবিষ্যৎ গবেষণার অমূল্য উপকরণ। যেমন সাংবাদিক চিত্রী ডিজ়াইনাররা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লিখেছেন প্রিন্ট থেকে ডিজিটাল: সংবাদমাধ্যমের যাত্রাপথের কথা। অতীত জীবন্ত হয়েছে হিকিজ় গেজ়েট, ক্যালকাটা গেজ়েট কি হিন্দু পেট্রিয়ট, গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা-র কথায়। আছে চিঠিপত্র, শোকসংবাদ, ভ্রম-সংশোধন, আলোকচিত্রের সঙ্গে সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ প্রসঙ্গ, জেলার সংবাদপত্রের দুর্লভ বিবরণ। সঙ্গে ক্রোড়পত্রে হরফশিল্পী রিকার্ডো ওলোকো-র বাংলা হরফের পরিবর্তন বিষয়ে গবেষণাপত্রের অনুবাদ। এ পত্রিকার সম্পদ বিপুল চিত্রসম্ভার, চমৎকার লে-আউট ও মুদ্রণমান।

সঙ্গে থাকুন
সঙ্গে রাখুন

গ্রাহক হোন!

অতিমারীর এই কালে উলাইচণ্ডীর উপাখ্যান

এই সময়, মে ৩১, ২০২০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষিত হয়েছিল মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে। সব কিছু বন্ধ। স্বাভাবিক ভাবেই, শহুরে শিক্ষিত মানুষ ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমকে বেছে নিল বিনোদনের নতুন উপায় হিসেবে সবই আন্তর্জালে। অন্তরীণ অবস্থার প্রাথমিক অভিঘাত কাটিয়ে তারাও এগিয়ে এসেছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বই-পুস্তিকা-পত্রিকা প্রকাশ করতে। ...গত দু’মাসে ইংরেজি, বাংলা মিলিয়ে। প্রকাশিত হয়েছে বেশ কিছু গ্রন্থপত্রিকা। সেই তালিকায় অন্যতম সংযোজন ‘হরপ্পা লিখন চিত্রণ’ পত্রিকার বৈদ্যুতিন পুস্তিকা। বয়স মাত্র কয়েক বছর হলেও বাংলা প্রবন্ধ-পত্রিকার জগতে ‘হরপ্পা’ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। চতুর্মাসিক সাহিত্যপত্র রূপে ‘হরপ্পা লিখন চিত্রণ’এর আত্মপ্রকাশ ২০১৭-র অক্টোবরে । ‘প্রস্তুতি সংখ্যার মধ্যে দিয়ে। মুদ্রণমাধ্যমে বা সাহিত্য-সংস্কৃতি-রীতি-নীতিকে তুলে ধরাই ছিল এর লক্ষ্য। এর পর সিনেমায় ভ্রমণ’, ‘ফোটোগ্রাফি’, ‘দুর্গা’, ‘পুস্তিকা’, ‘সংবাদপত্র’, ‘মাতৃরূপেণ’, ‘গল্পগাছা’— মোট আটটি সংখ্যায় ২০১৭-র অক্টোবর থেকে ২০২০-র ফেব্রুয়ারির সময়কালে। তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাঙালির কর্মোদ্যোগের প্রস্তুতির চিত্র থেকে চলচ্চিত্রে মানসভ্রমণ, বাঙালির পেশাদার ফোটোগ্রাফি চর্চা থেকে। শারদ-উৎসবের খুঁটিনাটি। বাংলা সংবাদপত্রের। বিভিন্ন দিক, দেবী দুর্গার বহুমাত্রিক উপস্থিতির কথা থেকে মৌখিক গল্প-বলার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য। প্রাথমিক ভাবে ‘হরপ্পা লিখন চিত্রণ’ ছাপাই মাধ্যমের পত্রিকা। প্রিন্ট ও ডিজিটাল দু’টির উপস্থাপনা ও বিন্যাস অরণ্যষষ্ঠী আঙ্গিকগতভাবে আলাদা হলেও, এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে, ‘হরপ্পা’ ১৪২৭ বঙ্গাব্দের সূচনায় দেশে-বিদেশে অগণিত বাঙালি উলাইচণ্ডী পাঠককে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে প্রকাশ করে বৈদ্যুতিন পুস্তিকা অরণ্যষষ্ঠীর রীতি কী ভাবে বাংলার ব্রতর সঙ্গে জড়িয়ে আছে, কেমন করে সময়ের গতিতে বদল ঘটেছে তার, এবং জামাইষষ্ঠী পালনে কী ভাবে অরণ্যষষ্ঠীর গুরুত্ব ম্রিয়মান হয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। পুস্তিকাক্রমের প্রথম সংখ্যা ‘হালখাতা’। কোনও বিনিময়মূল্য ছাড়াই গৃহবন্দি অবস্থায় পাঠকের কাছে পিডিএফ আকারে পাঠ রসদ পৌঁছে দেওয়াই ছিল প্রধান উদ্দেশ্য। সেখানে বৈশাখ মাসে বাঙালির পত্রিকা প্রকাশের ঐতিহ্যের কিছু নমুনা ‘বঙ্গদর্শন’ থেকে মাসিক বসুমতী’ পত্রিকার প্রথম। সংখ্যার চিত্র-সহ তুলে ধরা হয়। এই ক্রমে দ্বিতীয় পুস্তিকা ‘উলাইচণ্ডী প্রকাশিত হয় বুদ্ধপূর্ণিমার দিন। উলাইচণ্ডী বা ওলাইচণ্ডী, ওলাবিবির পুজোর ইতিহাসবিবর্তন, মারণরোগ রোধে তাদের পুজোর বঙ্গ-জুড়ে প্রসার এবং বর্তমানে অতিমারীর করুণ রূপ ফুটে ওঠে পুস্তিকাটিতে। ২৮ মে ২০২০, তিথি হিসেবে জৈষ্ঠমাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে প্রকাশিত ‘অরণ্যষষ্ঠী’ পুস্তিকায় অরণ্যষষ্ঠীর রীতিপ্রথা কী ভাবে বাংলার ব্রত ও প্রথার সঙ্গে জড়িয়ে আছে, কেমন করে সময়ের গতিতে বদল। ঘটেছে তার, এবং জামাইষষ্ঠী পালনে কী ভাবে অরণ্যষষ্ঠীর গুরুত্ব ম্রিয়মান হয়েছে। তা তুলে ধরা হয়েছে। একটা কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন, বৈদ্যুতিন পুস্তিকা যেহেতু কম্পিউটার বা মোবাইলের ছোট স্ক্রিনে পড়া হয়, তাই বড় লেখা বিভিন্ন পরিচ্ছদে ভাগ করে দিলে পাঠকের পড়তে সুবিধা হয়। তিনটি বৈদ্যুতিন পুস্তিকার প্রচ্ছদ করেছেন সৌম্যদীপ ও শিল্প নির্দেশনায় সোমনাথ ঘোষ। পুস্তিকাগুলি যৌথভাবে লিখেছেন সৌম্যদীপ এবং হরপ্পা সম্পাদক সৈকত মুখোপাধ্যায়।